ইন্টারনেটে অর্থ আয়ে ইনভেস্ট
ইন্টারনেট এর মাধ্যমে অর্থ আয়ের ব্যাপারে অনেক বিজ্ঞাপন দেখা যায় যেখানে বলা হয় কিছু টাকা ইনভেস্ট করার ব্যাপারে। বলা হয় ইনভেস্ট করার কিছুদিন পর তার টাকা ডাবল হয়ে যাবে বা এরকম অফার। এর থেকে দূরে থাকাই সবচেয়ে ভালো। কেনোনা এরকম বেশীরভাগ বিজ্ঞাপনই থাকে ভুয়া। সুযোগের সৎ ব্যবহার করে অর্থ হাতিয়ে নেয়াই প্রধান উদ্দেশ্য।
তবে কি ইনভেস্ট করে ইন্টারনেট থেকে আয় করা যাবে না? যাবে অবশ্যই। তবে ইনভেস্ট ধরন হতে হবে ভিন্ন। কি রকম?
ধরুন আপনি ইনভেস্ট করতেই চান। যাতে ইন্টারনেট থেকে অর্থ আয় করতে পারেন। তবে হয় কাজ শিখার জন্য অথবা নিজের একটি ওয়েবসাইট বানাতে বা অ্যাফিলিয়েশন করার জন্য প্ল্যাটফর্ম বানাতে ইত্যাদি কাজে ইনভেস্ট করুন। তবে যেখানেই ইনভেস্ট করতে যান না কেনো আপনাকে অবশ্যই ভালো ভাবে সেটার উপর রিসার্চ করতে হবে। জানতে হবে কোন সিস্টেম থেকে কি কি ভাবে ইনকাম করা যায়। কোন সিস্টেম কিভাবে ব্যবহার করতে হয়ে। সহায়ক কি কি লাগতে পারে ইত্যাদি খুঁটিনাটি।
কোথায় কোথায় ইনভেস্ট করতে পারেনঃ
- ব্লগ বা ওয়েবসাইটঃ আপনি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানাতে বিনিয়োগ করতে পারেন। একটি ওয়েবসাইট বানাতে ডোমেইন (Domain), হোস্টিং (Hosting) এবং ভালো আর্টিকেল কিনতে আপনার ভালোই অর্থ বিনিয়োগ লাগতে পারে। সেই সাথে এসইও (SEO- Search Engine Optimization) করতে আরো কিছু বিনিয়োগ লাগবে। আর ওয়েবসাইট থেকে আপনি বেশ কিছু উপায়ে আয় করতে পারবেন। যেমন ব্যানার বিজ্ঞাপন, অ্যাডসেন্স (Google AdSense), গেস্ট ব্লগিং (Guest Blogging) ইত্যাদি। এ ব্যাপারে আমাদের পরবর্তী পোস্ট এ বিস্তারিত জানতে পারবেন।
- ইউটিউব ভিডিওঃ ইউটিউব এর জন্য ভালো মানের ভিডিও তৈরি করতে বিনিয়োগ করতে পারেন। কেনোনা ইউটিউব এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও ভিত্তিক বিনোদনমূলক ওয়েবসাইট। এখানে ভালো মানের ভিডিও এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বিষয়ভিত্তিক ভিডিও আপলোড করে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমেও আয় করা সম্ভব। আবার বিভিন্ন কোম্পানির স্পন্সর হয়েও আয় করা সম্ভব। তবে ভিডিও বানাবার পাশাপাশি আপনার ভিডিও যাতে মানুষের কাছে পৌছাতে পারে সেজন্য মার্কেটিং করতেও আপনার কিছু বিনিয়োগ প্রয়োজন পড়বে।
- ডোমেইন ওয়েবসাইট কেনা বেচাঃ নতুন বা পুরাতন ভালো মানের ওয়েবসাইট বা ডোমেইন কেনা বেচা করতেও বিনিয়োগ করতে পারেন। এটাও একটি লাভজনক ব্যবসা। তবে এই ব্যবসা করতে আপনাকে অবশ্যই অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বুঝতে হবে কোন ওয়েবসাইট কিনলে ভালো হবে, কোনটা কিনা ঠিক হবে না ইত্যাদি। তবে মনে রাখতে হবে সাথে সাথেই যে ওয়েবসাইটটি বিক্রি হিয়ে যাবে তার নিশ্চয়তা নেই। এটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। ওয়েবসাইট কেনাবেচার জন্য জনপ্রিয় অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে। এর ভিতর Flippa.com অনেক বেশী জনপ্রিয়।
- ভিডিও গেমঃ বর্তমানে স্মার্টফোন এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে স্মার্টফোনের ভিডিও গেম এর চাহিদা। তাই ভালো মানের গেম তৈরি করে সেখান থেকে আয় করার পথও সুগম হচ্ছে। আপনি চাইলে একটি গেম বানাবার জন্য বিনিয়োগ করতে পারেন। তবে গেম হতে হবে আকর্ষণীয় এবং ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী। অর্থাৎ আপনাকে বুঝতে হবে গ্রাহক কি রকম গেম পছন্দ করে এবং সেই গেম এ কি কি থাকতে পারে। এরপর প্রফেশনাল গেম ডেভেলপার এর সহায়তায় আপনার গেম কে বাস্তবায়ন করে নিন।
- অনলাইনে প্রোডাক্ট কেনাবেচাঃ আপনি অনলাইনে একটি ছোট স্টোর খুলেও আয় করার পথ তৈরি করতে পারেন। পাইকারি রেটে ভালো মানের কিছু প্রোডাক্ট এনে বিক্রয় করতে পারেন। সেই সাথে নিজের তৈরি করা প্রোডাক্টও বিক্রয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার স্টোর ওয়েবসাইট ভিত্তিক হলে ওয়েবসাইট বানাতে কিছু বিনিয়োগ লাগবে। সেই সাথে মার্কেটিংতো থাকছেই। আর সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ভিত্তিক হলে শুধু মার্কেটিং এই আপনাকে বিনিয়োগ করতে হবে। তবে প্রোডাক্ট এর বিনিয়োগ সম্পূর্ণই আলাদা। তা নির্ভর করবে সম্পূর্ণই আপনার উপর।
এছাড়া আরো অনেক ভাবে অনেক ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ করা সম্ভব। অনলাইনে মুদ্রা কেনাবেচায় ট্রেড (ফরেক্স নামেই পরিচিত), বাজী ধরা এছাড়া আরো অনেক উপায় রয়েছে। যদিও আমরা এগুলোকে সাপোর্ট করি না বা বাংলাদেশের আইনে নিষিদ্ধ বলে এর সম্পর্কে বিস্তারিত আর লিখছি না। তবে যেখানেই বিনিয়োগ করছেন না কেন একটু ভেবেচিন্তে করবেন।
No comments:
Post a Comment